Followers

Breaking

Total Pageviews

Thursday, April 11, 2019

মরিচ চাষে ভাগ্যবদল, জামালপুর।


মরিচ বিক্রির জন্য বাজারে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। গতকাল ইসলামপুর উপজেলার গুঠাইল মরিচের হাটে।

ছবি ● সংগৃহিত।

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গুঠাইল এলাকায় যমুনা নদীর পারেই সপ্তাহে দুই দিন শুকনো মরিচের হাট বসে। প্রতি হাটেই ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ মণ শুকনো মরিচ ক্রয়-বিক্রয় হয়। এর আনুমানিক মূল্য অর্ধকোটি টাকা। এবার মরিচের ভালো দামে চাষিরা বেশ খুশি।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার ৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৪ হাজার চাষি মরিচ আবাদ করেছেন। গত বছর ২ হাজার ৯৫০ হেক্টরে মরিচ চাষ হয়েছিল। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় রোপণ করা হয়। চার মাসের মধ্যে ফলন আসে। গত মাস থেকেই মরিচ তোলা শুরু হয়েছে। দেশি জাতের বালুজুড়ি মরিচ আবাদ হয়েছে বেশি।

গতকাল বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, যমুনা নদীর একদম পারেই বিশাল শুকনো মরিচের হাট। চারদিকে মরিচের গন্ধ। কেনাবেচা নিয়ে চাষিরা ব্যস্ত। দরদাম ঠিক করে চাষিদের কাছ থেকে ক্রেতা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন মরিচ। হাটে গড়ে উঠেছে অর্ধশত মরিচের আড়ত।


কয়েকজন চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীভাঙন ও বন্যাকবলিত উপজেলা ইসলামপুর। উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত যমুনা নদী। একসময় বোরোই ছিল এ অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ফসল। কিন্তু ধান চাষে তেমন লাভ না হওয়ায় চাষিরা মরিচ আবাদে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। মরিচ বিক্রির বাড়তি অর্থে জীবনে এসেছে স্বাচ্ছন্দ্য। অনেকে সংসারের খরচ মিটিয়ে সঞ্চয়ও করতে পারছেন।

ব্যবসায়ী ও চাষিদের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কুলকান্দি, হরিণধরা, বেলগাছা, ধনতলা, সিন্দুরতলা, চর বরুল, মন্নিয়ার চর, সাপধরী, চেংগানিয়া, চর শিশুয়া, কুকুরমারি, চর মুন্নিয়া, কালির চর, রামতলা ও প্রজাপতি এলাকায় এই মরিচ চাষ হয়। সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার গুঠাইলে মরিচের হাট বসে। প্রতি হাটে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ মণ মরিচ কেনাবেচা হয়। মরিচের প্রকারভেদে প্রতি মণ ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

চেংগানিয়ার চাষি মোতালেব হোসেন গুঠাইল হাটে মরিচ বিক্রি করতে এসেছেন। ভালো দাম পেয়ে খুশি মোতালেব বলেন, তিনি এবার সাড়ে ১০ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছিলেন। এতে ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। তাঁর ফসলও ভালো হয়েছিল। তিনি এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছেন। আরও ১ লাখ ১০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারবেন।

কালির চর এলাকা থেকে মো. সেলিম মিয়া হাটে মরিচ বিক্রি করতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘এবার তিন বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছিলাম। ফলন খুব ভালো হয়েছে। কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছিলাম প্রায় ৫০ হাজার টাকার। এক সপ্তাহ ধরে শুকনো মরিচ বিক্রি শুরু করেছি। এ পর্যন্ত আরও প্রায় ৭৫ হাজার টাকার শুকনো মরিচ বিক্রি করেছি। আরও ১ লাখ টাকার মতো বিক্রি করা যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহের মধ্যে ইসলামপুরের পশ্চিম অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মরিচ চাষ হয়। চাষিরা এবার ভালো দাম পাচ্ছেন। গুঠাইল হাটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারেরা এসে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে মরিচ কেনেন। এতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। প্রতি হাটে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ মণ মরিচ বিক্রি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষি কার্যালয়ের পরামর্শে চাষি মরিচ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন।

নিউজ: জামালপুর ৩৬০°

Youtube Channel Facebook Page

No comments:

Post a Comment

Adbox